মাইনিং পুল( Mining Pool) কি? কিভাবে কাজ করে এবং কেন প্রয়োজন?

Mining pool

মাইনিং পুল (Mining Pool) কী?

মাইনিং পুল (Mining pool) হল একটি গ্রুপ যেখানে অনেক মাইনার তাদের হ্যাশ পাওয়ার (কম্পিউটিং ক্ষমতা) একত্রিত করে ব্লকচেইন নেটওয়ার্কে নতুন ব্লক তৈরি করে এবং তার বিনিময়ে পুরস্কার পায়। একক মাইনারের জন্য ব্লক মাইন করা কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ হতে পারে, বিশেষ করে বিটকয়েনের মতো উচ্চ ডিফিকাল্টি লেভেলের ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে। মাইনিং পুল এই সমস্যার সমাধান করে।

মাইনিং পুল (Mining Pool) কীভাবে কাজ করে?

1. হ্যাশ পাওয়ারের সমন্বয়: মাইনাররা তাদের কম্পিউটিং শক্তি পুলে যোগ দেয়। প্রত্যেক মাইনার ছোট ছোট গাণিতিক সমস্যা সমাধান করে, যা ব্লকচেইনের ব্লক সমাধানের অংশ।

2. ব্লক সমাধান: পুলের সম্মিলিত শক্তি দিয়ে একটি ব্লক সমাধান করা হয়। পুলের সফটওয়্যার এই কাজগুলো সমন্বয় করে।

3. পুরস্কার বিতরণ: ব্লক মাইন হলে পুরস্কার (ক্রিপ্টোকারেন্সি) মাইনারদের মধ্যে তাদের অবদানের (হ্যাশ পাওয়ার) ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়া হয়।

4. ফি: পুল সাধারণত একটি ছোট ফি (১-৩%) নেয় তার পরিচালনার জন্য।

মাইনিং পুলের প্রকারভেদ

1. পে-পার-শেয়ার (PPS): মাইনাররা তাদের হ্যাশ পাওয়ারের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট পুরস্কার পায়, এমনকি পুল ব্লক মাইন না করলেও। ঝুঁকি কম, তবে পুরস্কারও তুলনামূলক কম হতে পারে।

2. প্রপোর্শনাল (PROP): পুরস্কার মাইনারদের অবদানের অনুপাতে ভাগ করা হয়, তবে শুধু ব্লক মাইন হলেই পাওয়া যায়।

3. স্কোর-বেসড: মাইনারদের অবদানের সময় এবং পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার দেওয়া হয়।

4. PPLNS (Pay Per Last N Shares): শেষ কিছু শেয়ারের ভিত্তিতে পুরস্কার দেওয়া হয়, যা পুল হপিং (পুলের মধ্যে ঘন ঘন পরিবর্তন) রোধ করে।

মাইনিং পুলের সুবিধা

– নিয়মিত আয়: একক মাইনিংয়ের তুলনায় ছোট ছোট নিয়মিত পুরস্কার পাওয়া যায়।

– কম ঝুঁকি: একা মাইনিংয়ে ব্লক পাওয়ার সম্ভাবনা কম, পুলে এটি বেশি।

– সহজ প্রক্রিয়া: নতুন মাইনারদের জন্য পুল সহজ এবং কার্যকর।

– কম হার্ডওয়্যার প্রয়োজন: কম শক্তিশালী হার্ডওয়্যার দিয়েও মাইনিং সম্ভব।

মাইনিং পুলের অসুবিধা

– ফি: পুল ফি নেয়, যা আয় কমায়।

– কেন্দ্রীকরণের ঝুঁকি: বড় পুলগুলো নেটওয়ার্কের উপর অত্যধিক নিয়ন্ত্রণ পেতে পারে (৫১% অ্যাটাক ঝুঁকি)।

– নির্ভরতা: পুলের সার্ভার ডাউন হলে মাইনিং বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

– কম স্বাধীনতা: মাইনাররা পুলের নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য।

জনপ্রিয় মাইনিং পুল

– বিটকয়েন: F2Pool, AntPool, BTC.com, ViaBTC।

– ইথেরিয়াম (প্রুফ-অফ-ওয়ার্ক যুগে): Ethermine, F2Pool, Nanopool।

– অন্যান্য কয়েন: NiceHash, Slush Pool, MiningPoolHub।

কীভাবে একটি মাইনিং পুল বাছাই করবেন?

1. পুলের আকার: বড় পুলে নিয়মিত পুরস্কার, ছোট পুলে কম কেন্দ্রীকরণ।

2. ফি: কম ফি সম্পন্ন পুল বেছে নিন।

3. পেমেন্ট সিস্টেম: আপনার আয়ের ধরন অনুযায়ী PPS, PROP, বা PPLNS বেছে নিন।

4. সার্ভারের অবস্থান: কাছাকাছি সার্ভারে লেটেন্সি কম হয়।

5. নির্ভরযোগ্যতা: পুলের খ্যাতি এবং ইতিহাস পরীক্ষা করুন।

বাংলাদেশে মাইনিং পুল

বাংলাদেশে মাইনিং তুলনামূলক কম জনপ্রিয়, কারণ উচ্চ বিদ্যুৎ খরচ এবং হার্ডওয়্যারের সীমিত প্রাপ্যতা। তবে, কেউ মাইনিং করতে চাইলে আন্তর্জাতিক পুলে যোগ দিতে পারেন। ইন্টারনেট সংযোগ ভালো হলে যেকোনো পুলে কাজ করা সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *